খোয়াই নদী বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃসীমান্ত নদী যা বাংলাদেশের হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যে প্রবাহিত। এই নদীটি ভারতের ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৬৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১০৬ মিটার, এবং এর প্রকৃতি সর্পিলাকার। এটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ২২ হিসেবে পরিচিত, যা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দ্বারা সংজ্ঞায়িত।
উৎপত্তি ও প্রবাহ:
খোয়াই নদী ত্রিপুরার আঠারমুড়া পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয় এবং সিলেট জেলার বাল্লা নামক স্থান দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর এটি হবিগঞ্জ জেলার পূর্বপ্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনা নদীতে মিশে যায়। নদীটি ভারতীয় খোয়াই এলাকা নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে।
কিংবদন্তি ও নামকরণের গল্প:
খোয়াই নামের উৎপত্তি সম্পর্কে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। পুরানো কালে, নদীটি "ক্ষমা" বা "ক্ষেমা" নামে পরিচিত ছিল। এর পিছনে একটি জনপ্রিয় প্রবাদ রয়েছে। এক সময়, একটি ভিনদেশী বণিক তার পানসী নৌকা নিয়ে নদীর তীরে এসে খাসিয়া সম্প্রদায়ের একটি পূজা উৎসব দেখছিল। সে যুবকের রূপে মুগ্ধ হয়ে এক খাসিয়া কন্যার প্রেমে পড়ে। ওই কন্যা বণিকের সঙ্গে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে, খাসিয়া সম্প্রদায় তাকে তাদের সম্প্রদায়ের একজন যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেয়। তবে সেই কন্যা নদীতে আত্মাহুতি দেন, এবং তখন থেকে নদীটির নাম "ক্ষেমা" বা "ক্ষমা" হয়।
এটি পরে খোয়াই নামে পরিচিত হয়েছিল, এবং এই কিংবদন্তি নদীটির নামকরণের সাথে যুক্ত।